Hazrat Umar (ra.): Biography

Islamic Women

মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০১৩

রাজনৈতিক সংঘাত, অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা থেকে মুক্ত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে ক্ষুদ্র ভাবনা 



ক্ষমতাসীনদের অধীনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের সবগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল প্রায় শতভাগ প্রশ্নবিদ্ধ তথা কারচুপির। ইতিহাসের সবচেয়ে নির্মম সত্য হচ্ছে মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহন করে না। বিগত ৯টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে ৫টিই অনুষ্ঠিত হয় ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে। আর এ ৫টি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল পরাজিত হয়নি বরং বিজয়ী হয়েছে। দুই দলের কামড়া-কামড়ির সুযোগে আগ্রাসীরা যেন বানরের পিঠা ভাগ করতে না পারে। ক্ষমতা যেন উত্তর পাড়ায় চলে না যায়!

স্বাধীনতা পরবর্তী ৪ দশকেরও বেশি সময়ে অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের সংঘাত, অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতার চিত্র সবার কাছেই স্পষ্ট। সরকার কিংবা বিরোধী দল হিসেবে বড় দলগুলোর ভূমিকাও কারো অজানা নয়। ক্ষমতার লড়াইয়ে টিকে থাকতে দেশের সাংবিধানিকসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ধ্বংস, অর্থনীতির চরম ক্ষতিসাধন কিংবা নির্বিচারে গণহত্যার মত ঘটনাও খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা, পেশী শক্তি ও কালো টাকার দৌরাত্ম্য এবং সর্বোপরি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর বিভিন্ন সময়ে নিজেদের স্বার্থে অবস্থান পরিবর্তন জাতির অগ্রগতির পথে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব কারনে জাতির নীতি নির্ধারক হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের অধিকাংশের যোগ্যতা ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। উন্নত দেশগুলোতে সংসদ সদস্য তথা পলিসি মেকারদের আসনে বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের সমারোহ দেখা গেলেও আমাদের চিত্র ভিন্ন। স্ব স্ব সেক্টরে যোগ্য নেতৃত্ব নিশ্চিত না করে অদক্ষ, মাস্তান ও লুটেরাদের নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নেওয়া আশা করা বোকার স্বর্গে বাস করার নামান্তর।

প্রস্তাবনার মূল দিকসমূহ

১. রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতার ভিত্তিতে গঠিত নির্দলীয় একটি সরকারের অধীনে নির্বাচন।

২. আসনভিত্তিক দলীয় কোন প্রার্থী থাকবে না। নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারী দলগুলোর প্রতীক দেখে জনগণ ভোট দিবেন। তবে দলগুলো তাদের পছন্দের ক্রমানুসারে ৩০০ জনের তালিকা প্রদান করবে। প্রাপ্তভোটের আনুপাতিক হারে দলগুলোর মধ্যে আসন সংখ্যা বন্টন করা হবে। (এতে কোন সংসদীয় এলাকায় সুনির্দিষ্ট প্রার্থী না থাকায় নির্বাচনী ব্যয়, পেশীশক্তির ব্যবহার থাকবে না। দলগুলোর মনোনয়ন বেচাকেনার প্রয়োজন ও পথ উভয়ই বন্ধ হবে। নির্বাচনে বিজয় কিংবা ভোট প্রাপ্তি নির্ভর করবে দলের মেনিফেস্টো ও প্রার্থী তালিকায় অন্তর্ভুক্তদের যোগ্যতার ওপরে।)

৩. ফলাফল যাই হোক না কেন, সরকার গঠন করা হবে ফলাফলের আনুপাতিক হারে সম্মিলিতভাবে। এককভাবে কোন দল সরকার গঠন করতে পারবে না। মন্ত্রীত্বও বন্টন করা হবে দলগুলোর প্রাপ্ত ফলাফলের আনুপাতিক হারে। (ফলে অদক্ষতা ও লুটপাটের পরিবর্তে বিভিন্ন দলের প্রাপ্ত মন্ত্রণালয় তথা মন্ত্রীদের মধ্যে দক্ষতা ও সততা প্রমাণের প্রতিযোগিতা শুরু হবে)

সরকার ও বিরোধী দলে অবস্থানকালে রাজনৈতিক দলগুলো আচরণ বদলানো ছাড়া এ জাতির এগিয়ে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই। উপরিউক্ত প্রস্তাবনাগুলো কার্যকর করা গেলে অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ ও পরাশক্তির আজ্ঞাবহদের কবল থেকে রাজনীতি চলে যাবে দক্ষ, সৎ ও দেশপ্রেমিকদের দায়িত্বে- ইনশাল্লাহ। নির্বাচনের সময় বিজয়ের লক্ষ্য রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী মনোনয়নে কালো টাকা ও পেশী শক্তির পরিবর্তে দক্ষ, সৎ ও দেশপ্রেমিকদের প্রাধান্য দিতে বাধ্য হবে। দলগুলোর প্রার্থী তালকায় ঠাই পাবে উন্নত দেশগুলোর ন্যায় সৎ ও দক্ষ রাজনীতিক, দার্শনিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ শিক্ষক, বিজ্ঞানী, পরিবেশবিদ, অর্থনীতিবিদ, আইনবিদ, প্রকৌশলী তথা সর্বক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে মত বিশেষজ্ঞদের সমারোহ। একবিংশ শতাব্দীর এই অগ্রসরমান বিশ্বে খুব বেশি দিন হয়তো নতুন প্রজন্ম তথা জাতিকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করা যাবে না। প্রস্তাবনাটি অপার সম্ভাবনাময় আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমিতে কার্যকর করা গেলে সততা, দক্ষতা ও দেশপ্রেম ছাড়া নষ্টরা দেশ গড়ার মহান জায়গা থেকে ছিটকে পড়বে- ইনশাল্লাহ। 
[ Hasan (A Blogger)]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন