Hazrat Umar (ra.): Biography

Islamic Women

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৩

 রানা ১৫ দিনের রিমান্ডে : সাভার যুবলীগের কমিটি বাতিল 

 

 সাভারে ধসে পড়া ভবনের মালিক সোহেল রানাকে দুই মামলায় ১৫ দিন, ইথারটেক গার্মেন্টস মালিক আনিসুর রহমানকে ১২ দিন, শাহ আলম মিঠু ও অনিল দাসকে ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
গতকাল রাষ্ট্রপক্ষের একতরফা শুনানি শেষে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াসিম শেখ এ আদেশ দেন। এ দিকে সাভার পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানাকে নিয়ে সমালোচনার প্রেক্ষিতে গতকাল যুবলীগের পৌর ও থানা কমিটি বিলুপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। 
গতকাল দুই মামলায় নতুন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মীর শাহীন শাহ পারভেজ আদালতে হাজির করে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে দুটি মামলায় ২০ দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। একই সঙ্গে ইথারটেক পোশাক কারখানার মালিক আনিসুর রহমানকে দুই মামলায় ৭ দিন করে ১৪ দিন ও রানাকে ভারত পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেফতার শাহ আলম মিঠু ও অনিলকে শুধু দণ্ডবিধির মামলায় ৫ দিন করে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। গতকাল আদালতে রিমান্ড আবেদন শুনানির আগে ঢাকা আইনজীবী সমিতির এক জরুরি সাধারণ সভায় আসামি রানার পক্ষে কোনো আইনজীবী তাকে আইনি সহায়তা দিতে পারবে না মর্মে সিদ্ধান্ত হয়। শুনানির সময় আইনজীবীদের এ সিদ্ধান্তের কথা আদালতকে জানানো হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা জেলা পিপি খোন্দকার আবদুুল মান্নান ও অতিরিক্ত পিপি আনোয়ারুল কবীর বাবুল রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানিতে তারা বলেন, ২৩ এপ্রিল ভবনটির পিলারে ফাটল দেখা দিলেও ২৪ তারিখ সকালে আসামিরা জোর করে চাকরির ভয় দেখিয়ে কারখানায় প্রবেশ করিয়ে গার্মেন্টস কর্মীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে বেঁচে আসা শ্রমিকদের সঙ্গে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাই আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তারা আরও বলেন, রানা প্লাজা ধসের এ ঘটনাটি দুর্ঘটনা নয়; এটি একটি নারকীয় হত্যাকাণ্ড। আসামিরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গার্মেন্টস কর্মীদের হত্যার উদ্দেশে চাকরির ভয় দেখিয়ে ভবনে প্রবেশ করতে বাধ্য করেন।
রানা ও অপর আসামিদের পক্ষে একাধিক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত থাকলেও তারা আসামিদের কারও পক্ষে কোনো ওকালতনামা দাখিল বা জামিনের আবেদন করেননি।
এদিকে আদালতের রিমান্ড আদেশের পর রানাকে আদালত থেকে বের করা হলে উপস্থিত আইনজীবী ও সাধারণ মানুষ রানার ফাঁসি দাবিতে স্লোগান দেয়।
উল্লেখ্য, এর আগে এ দুটি মামলায় সাভার পৌরসভার প্রকৌশলী এমতেমাম হোসেন ও সহকারী প্রকৌশলী আলম মিয়া, রানা প্লাজার তিনটি পোশাক কারখানার মালিক বজলুস সামাদ আদনান, মাহমুদুর রহমান তাপস ও আমিনুল ইসলামকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় রানা ও গার্মেন্ট মালিকদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া বা তাচ্ছিল্যপূর্ণ কাজ করে সাধারণ, গুরুতর জখম ও মৃত্যু ঘটানোসহ ক্ষতিসাধনের অভিযোগে দণ্ডবিধি আইনে পুলিশের উপ-পরিদর্শক ওয়ালী আশরাফ খান একটি ও ইমারত নির্মাণে নির্মাণ কোড অনুসরণ না করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে অপর মামলাটি করেন। এছাড়া রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অথরাইজড অফিসার হেলাল উদ্দিন সাভার মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন।
পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে দণ্ডবিধির মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাপ্রচেষ্টার অভিযোগে ৩০৭ ধারাটি যুক্ত করা হয়েছে।
ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় শুধু রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা এজাহারনামীয় আসামি। এছাড়া অবহেলাজনিত মৃত্যুসহ অন্যান্য অভিযোগের অপর মামলার আসামি রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা এবং তার বাবা আবদুল খালেক, নিউ ওয়েভ বাটন গার্মেন্টসের মালিক আনিসুজ্জামান, স্পানিশের মালিক ডেভিড মেয়র রেকো, ফ্যান্টম অ্যাপারেলস ও ট্যাকের মালিক মো. আমিনুল ইসলাম এবং রিমান্ডে যাওয়া নিউ ওয়েভ স্টাইলের মালিক বজলুস সামাদ আদনান।
সাভার থানা ও পৌর যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত
সাভার থানা ও পৌর যুবলীগের কমিটি বিলুপ্তের ঘোষণা দেয়া হয়। সাভারে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা যুবলীগের কেউ নন—এমন দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি। বিবৃতিতে বলা হয়, এলাকার যুবলীগ নেতা সোহেল রানাকে নিয়ে যখন নানা সমালোচনা চলছে, তাই সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিল।
গতকাল যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সাভারে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ভবন মালিক সোহেল রানার সঙ্গে যুবলীগের সংশ্লিষ্টতার যেসব খবর গত কয়েকদিন ধরে গণমাধ্যমগুলোতে প্রচারিত হয়েছে তা আওয়ামী যুবলীগের দৃষ্টিগোচরে এসেছে। গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদে বলা হয়, সোহেল রানা সাভার পৌর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। কিন্তু আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী যুবলীগের গঠনতন্ত্রে কোনো পর্যায়ের কমিটিতেই সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বলে কোনো পদ নেই।’ বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘সাভার পৌর যুবলীগের যে কমিটি আমাদের কাছে আছে, তাতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদেও সোহেল রানা নামের কেউ নেই। তাই এটা স্পষ্ট যে, রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা স্বঘোষিত পদ তৈরি করে যুবলীগের নাম ব্যবহার করে পোস্টার, ব্যানার করেছে তার ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন