মানুষের ভবিষ্যত প্রতিদ্বন্দী
এতে গেল সায়েন্স ফিকশনের কথা। বাস্তব জগতেই খুঁজে দেখা যাক না রোবটের কী অবস্থা? মাঝে মাঝেই পত্রিকায় খবর আসে জাপানে নাকি কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের রিসিপসনিস্ট রোবট; রোবট মডেল, রোবট ওয়েটারের দেখা মেলে।
রোবটের বিবর্তনের ইতিহাসে একটু চোখ রাখা যাক। ১৮১৪ সালে মেরী শেলীর ফ্রাঙ্কেনস্টাইন অর মর্ডান প্রমিথিউস সায়েন্স ফিকশনে ড. ফ্রাঙ্কেলস্টাইন কৃত্রিম মানুষ তৈরি করতে গিয়ে এক ভয়ংকর দানব তৈরি করে ফেলেন। কিন্তু সত্যিকার অর্থে যাকে রোবট বলে তার জন্ম বিংশ শতাব্দিতেই। ১৯১৩ সালে আমেরিকার স্পেরি জহিরোস্কোপ কোম্পানি প্রথম সফল ভাবে রোবট তৈরি করেন। সেই রোবট দুনিয়াব্যাপী সাড়া জাগাতে পারেনি। ১৯৮৪ সালে ব্রিটিশ আবিষ্কারক উইলিয়াম গ্রে ইলেকট্রিক পার্টস দিয়ে এলমার এবং এলিম নামে দুটি রোবট তৈরি করে। ১৯৫৬ সালে জর্জ ডেভল এবং জোসেফ এনজেলবার গড়ে তোলেন বিশ্বের প্রথম রোবট উৎপাদক কোম্পানি স্কুল। ১৯৭০ সালে রোবট প্রভূত উন্নতি ঘটে। রোবট দিয়ে মোটর কারখানায় ওয়েলডিং ও রং করার কাজ করানো হয়। ১৯৮০ সালে ৮০০০ উন্নত কম্পিউটার উৎপাদন করা হয়। এ ধরনের রোবট যেমন নিজেই নিজেকে নির্দেশনা দিতে পারে তেমনি প্রদত্ত কমান্ড মনেও রাখতে পারে। ১৯৯০ সালে আমেরিকান জেনারেল মোটর কোম্পানি ইলেট্রনিক চোখযুক্ত রোবট তৈরি করেন।
বর্তমানে রোবটের এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে মানুষ আর রোবটকে আলাদা করা দায়। এর পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা জাপানী বিজ্ঞানীদের। আজকাল ক্রিড়াঙ্গনেও ঢুকে গেছে রোবট। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে রোবট পাড়ি দিচ্ছে মহাকাশেও। রোবট নিয়ে এই যে এতো মাতামাতি সে রোবট শব্দটি কোনো বিজ্ঞানীর মুখ থেকে প্রথম বেরোয়নি। ১৯২১ সালে ব্যারেল কেপেক নামে এবং নাট্যকার তার নাটকে রোবট শব্দটা ব্যবহার করেন। পৃথিবীর প্রথম সায়েন্স ফিকশন মেরি শেলির ফ্যাঙ্কেনস্টাইন-এর কাহিনিতে ফ্যাঙ্কেনস্টাইন নামের এক রোবট বিজ্ঞানী তৈরি করতে গিয়ে দূর্ঘটনাবশত তৈরি হয়ে যায় এক দানব। সেই রোবট নিজের অধিকার আদায়ে ব্যর্থ ধ্বংসযজ্ঞে মেতে ওঠে। নিজের প্রাণ দিয়ে নিজের অদূরদর্শি আবিষ্কারের মাশুল গুণতে হয় ফ্রাঙ্কেইন স্টাইনকে।
আজকের পৃথিবীতে রোবটের উন্নতি সাধনে দুনিয়াব্যাপী প্রযুক্তিবিদরা যেভাবে আদাজল খেয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছেন তাতে ভবিষ্যতে অবিকল সানুষের মতো জৈব কাঠামোর রোবট তৈরি হওয়া আস্বাভাবিক কিছুই নয়। তখন যদি কোনো রোবট সম্প্রাদায় মনিবদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তখন মানবজাতির কী অবস্থা হবে ভাবা যায়!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন