বাংলাদেশের 'রুপকথা'....
ওয়াশিক ফারহান রূপকথা। ঢাকা গুলশানের মাত্র ৭ বছর বয়সী বাংলাদেশী এই কম্পিউটার জিনিয়াস নাম লেখাতে যাচ্ছে ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে’। এর আগে রিপলি’স বিলিভ ইট অর নট-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রিপলি’স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ২০১১ সালে রূপকথার অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি মোতাবেক রূপকথার মেধার স্বীকৃতি দেয় রিপলি’স কর্তৃপক্ষ। এরপর রূপকথাকে ‘বিস্ময়কর বালক’ স্বীকৃতি দিয়ে একটি বিশেষ ছবি প্রকাশ করেছিল রিপলি’স বিলিভ ইট অর নট (http://www.ripleys.com/weird/videos-and-oddities/ ripleys-syndicated-cartoons/cartoon-11-25-2012/)। একই সঙ্গে রূপকথাকে একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবেও অভিহিত করেছে তারা। কিন্তু অতটুকু শিশুর পারফরম্যান্স নিয়ে বর্তমানে গিনেস বুকে তার নাম আসা মানে বাংলাদেশীদের জন্য বিরাট গর্বের একটা বিষয়।
প্রয়োজনীয় চুক্তিস্বাক্ষর সম্পন্ন
গতকাল রূপকথার মা সিনথিয়া ফরহিন রিসা জানালেন, শিগগিরই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদে প্রোগামার হিসেবে গিনেস বুকে রূপকথার নাম প্রকাশ পেতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও জানান, গিনেস বুকে নাম প্রকাশের নিয়ম অনুযায়ী গত ১৬ মে ধানমন্ডির ক্রিয়েটিভ আইটি লিমিটেডের অফিসে একটি ভিডিও ডকুমেন্টেশন তৈরি করা হয়। এই ভিডিও এবং অন্যান্য ডকুমেন্টস গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্বের শীর্ষ গণমাধ্যমে রূপকথা
দেশের অনেক মিডিয়ায় রূপকথার সচিত্র সংবাদ ছাপালেও রূপকথা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেশ ভালো করেই জায়গা করে নিয়েছে। এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবে অভিহিত করে রূপকথাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বিবিসি, ক্যালিফোর্নিয়া অবজারভার, নিউইয়র্ক টাইমস, নিউইয়র্ক হেরাল্ড ট্রিবিউন, এস্টেট নিউজ, চিলড্রেন পোস্ট, হিন্দুস্থান টাইমসসহ অনেক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও অনলাইন। কোথাও কোথাও তাকে মডেল হিসেবেও তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশে অষ্টম শ্রেণীর ‘ইংলিশ ফর টুডে’ টেক্সট বইয়ে রূপকথাকে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রয়োজনীয় চুক্তিস্বাক্ষর সম্পন্ন
গতকাল রূপকথার মা সিনথিয়া ফরহিন রিসা জানালেন, শিগগিরই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদে প্রোগামার হিসেবে গিনেস বুকে রূপকথার নাম প্রকাশ পেতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও জানান, গিনেস বুকে নাম প্রকাশের নিয়ম অনুযায়ী গত ১৬ মে ধানমন্ডির ক্রিয়েটিভ আইটি লিমিটেডের অফিসে একটি ভিডিও ডকুমেন্টেশন তৈরি করা হয়। এই ভিডিও এবং অন্যান্য ডকুমেন্টস গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্বের শীর্ষ গণমাধ্যমে রূপকথা
দেশের অনেক মিডিয়ায় রূপকথার সচিত্র সংবাদ ছাপালেও রূপকথা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেশ ভালো করেই জায়গা করে নিয়েছে। এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবে অভিহিত করে রূপকথাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বিবিসি, ক্যালিফোর্নিয়া অবজারভার, নিউইয়র্ক টাইমস, নিউইয়র্ক হেরাল্ড ট্রিবিউন, এস্টেট নিউজ, চিলড্রেন পোস্ট, হিন্দুস্থান টাইমসসহ অনেক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও অনলাইন। কোথাও কোথাও তাকে মডেল হিসেবেও তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশে অষ্টম শ্রেণীর ‘ইংলিশ ফর টুডে’ টেক্সট বইয়ে রূপকথাকে তুলে ধরা হয়েছে।
রুপকথা |
রূপকথা যা জানে-
কিন্তু কম্পিউটারের কী জানে রূপকথা—স্বভাবতই এ প্রশ্ন জাগে সবার মনে। ছয় বছরের এই বয়সে অধিকাংশ শিশু যখন খেলনাপত্র নিয়ে খেলাধুলা করে তখন রূপকথা তার নিজস্ব কম্পিউটার সিস্টেম (উইন্ডোসসহ) তৈরি করে এবং একজন বিশেষজ্ঞের মতো কম্পিউটার প্রোগ্রামিং করে। জন্মগতভাবে মেধাবী রূপকথার বাসা রাজধানী ঢাকার গুলশানে। অবিশ্বাস্যভাবে মাত্র সাত মাস বয়স থেকেই সে কম্পিউটার নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করে এবং দুই বছর বয়সে কম্পিউটারে লেখালেখি করা শিখে ফেলে। তার গর্বিত মা সিনথিয়া ফারহিন রিসা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এই বিস্ময়বালক প্রতিদিন ১২ ঘণ্টারও বেশি কম্পিউটারের পেছনে ব্যয় করে এবং গেমের কারেক্টর কীভাবে পরিবর্তিত হয় তা জানার চেষ্টা করে।
শুধু তাই নয়, এই বয়সেই সে শিখে ফেলেছে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, প্রজেক্ট টুল তৈরি, সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের মতো অনেক জটিল কাজ। বর্তমানে দিনের ১২ ঘণ্টাই কাটে তার কম্পিউটারের সঙ্গে। ৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই ‘ওয়ার্ল্ড নিউজ এজেন্সি’ রূপকথাকে বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী প্রোগ্রামার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
শুরুর দিককার কথা
রূপকথার জন্ম ২০০৬ সালের ২৭ জানুয়ারি ঢাকার গুলশানে। জন্মের পর ওর বয়স যখন মাত্র কয়েক দিন, তখন সে পিসির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত। মাত্র ৭ মাস বয়স থেকেই রূপকথা তার বাবার পিসিতে মাউস নিয়ে কম্পিউটার গেমস খেলা শুরু করে। তার বয়স যখন ১ বছর, তখন তাকে কিছু খাওয়াতে চাইলে কম্পিউটারের সামনে বসিয়ে খাওয়ানো হতো। প্রথমে পিসি অন করতে হতো, এরপর সে তার সামনে বসে খাওয়া শুরু করত। মাত্র দুই বছরের মাথায় সে এমএস ওয়ার্ডে টাইপিং শুরু করে। তাকে খাবার খাওয়ানো হতো পিসির সামনে বসিয়ে বিভিন্ন অ্যানিমেশন ছবি দেখিয়ে। ওইটুকু বয়সী শিশুর এই আবদার মেটাতে তার মা সিনথিয়া ফারহিন রিসাকে সবকিছুই করতে হতো।
আরও বিস্ময়কর দক্ষতা অর্জন করেছে
রূপকথা তার হাতের ছোট আঙুল দিয়ে না দেখে এত স্পিডে টাইপ করতে পারে যে বিশ্বাস করাই কঠিন। টাইপিং তার কাছে খুব সাধারণ একটি বিষয়। এরই মধ্যে উইন্ডোজ এক্সপি, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, পাওয়ার পয়েন্ট, এডোবি ফটোশপ, ফ্লাশ প্রভৃতিতে বেশ পারদর্শিতা হয়ে গেছে। এমএস ওয়ার্ডের ফাইল তৈরি, টেক্সট ডিজাইন, পিকচার অ্যাড, গ্রাফ ও টেবিল ওয়ার্ক, এক্সেল দিয়ে বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ, পাওয়ার পয়েন্ট দিয়ে পিকচার মুভিং অ্যানিমেশন, স্লাইড শো, সাউন্ড ও মিউজিক অ্যাডের কাজ তার কাছে কয়েক মিনিটের ব্যাপার মাত্র। ফটোশপে যে কোনো ছবি এডিট করতে পারে স্বাচ্ছন্দ্যে। তথ্য পরিবর্তন করে একটি গেমসের চরিত্রকে আরেকটি গেমসে ঢুকিয়ে দিতে পারে অবলীলায়। ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন গেমিং সফটওয়্যার সে নিজে ডাউনলোড করে নিজেই ইনস্টল করে। একইভাবে সিডি থেকে বিভিন্ন সফটওয়্যার ও গেমস সে নিজে নিজেই পিসিতে ইনস্টল করে।
হার্ডওয়্যার বিষয়েও তার ভালো জ্ঞান আছে। প্রিন্স অব পার্সিয়া, টার্মিনেটর থ্রি, এজ অব মিথলজি, এজ অব এম্পায়ারসহ ৭শ’র অধিক জটিল কম্পিউটার গেমস সে এরই মধ্যে খেলেছে। ফেসবুক ও মাইস্পেসসহ ইন্টারনেটের বেশ কয়েকটি সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটেও তার অবাধ বিচরণ। ওয়াসিক ফারহান রূপকথা নামে সার্চ করলেই তাকে পাওয়া যাবে। এর বাইরে প্রায় পাঁচ হাজার নির্ভুল ইংরেজি শব্দ জানা আছে তার। রূপকথার মা সিনথিয়া ফারহিন রিসা জানালেন, খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেই সে বসে পড়বে কম্পিউটারে। এখন সে দিনের ১২ ঘণ্টা সময় কাটায় কম্পিউটারের সঙ্গে। তার মা অবাক করে দিয়ে জানালেন, এত কিছুর জন্য তার কোনো স্কুল কিংবা প্রশিক্ষক ছিল না কোনোদিন, এখনও নেই। যা শিখেছে সব রূপকথা নিজে নিজেই শিখেছে।
শুধু কি তাই...?
কম্পিউটার নিয়ে এখানেই রূপকথার শেষ নয়। ফোল্ডার ম্যানেজমেন্টেও তার রয়েছে অসম্ভব দক্ষতা। পিসির ড্রাইভ নেম ও ডেস্কটপের আইকন পরিবর্তন করে দেবে সেকেন্ডেই। এই বয়সে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে সে যতটুকু পারদর্শিতা অর্জন করেছে, বলা যায় অনেক দক্ষ প্রোগ্রামারও তা পারেনি। প্রোগ্রামিংয়ে সে অসাধারণ দক্ষতা অর্জন করেছে। সে সি, সি++, ভিজ্যুয়াল বেসিক, জাভা, পাইথন প্রভৃতিতে দক্ষতা অর্জন করার পাশাপাশি আলাদা আলাদা কোড দিয়ে নানা প্রোগ্রাম রান করাতে পারে। এমন অনেক কিছুই সে শিখেছে যা কোনো কম্পিউটার প্রোগ্রামারও বুঝতে পারছে না যে আসলে রূপকথা পিসিতে বসে কী করে! ।
খেলনা নিয়ে যখন অন্য শিশুদের সময় কাটছে, রূপকথা তখন বিরামহীনভাবে কম্পিউটারের সঙ্গে কথা বলছে। মাঝে মাঝে তার কম্পিউটারকে রি-ফরমেট করতে হয়। সেটআপ সে নিজেই দেয়। উইন্ডোজ সেটআপ নয়, ভিসতা ও ওরাকল সেটআপও সে করতে পারে। সতর্কতা হিসেবে প্রতিদিন সে ভাইরাস স্ক্যানও করে। অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের ডেট এক্সপায়ার করলে নিজেই ইন্টারনেট থেকে আপডেটেড ভার্সনটি ডাউনলোড করে নেয়। পাশাপাশি শিখে ফেলেছে ফটোশপ ও ফ্লাশ ফাইভের নানা ডিজিটাল কারুশিল্প। মোট কথা, কম্পিউটারের এমন কিছু নেই যা তার কাছে অজানা।
রূপকথার কাজের ভিডিও লিঙ্ক
অসম্ভব প্রতিভাধর রূপকথাকে পাওয়া যাবে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউবে। সার্চ করতে হবে incredible cyber baby roopkotha অথবা amazing cyber baby roopkotha টাইপ করে। রূপকথার কাজ নিয়ে ইউটিউবসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটে রয়েছে বেশকিছু ভিডিও ক্লিপিংসের লিঙ্কস্। এগুলোর কোনোটিতে দেখা যাচ্ছে সে অনেক দ্রুত টাইপ করছে। আবার কোনোটিতে প্রোগ্রামিং বা গেমস নিয়ে কাজ করছে। এমন ভিডিও লিঙ্কসের ঠিকানা হলো—
http://www.youtube.com/user/MegaFarheen
আমাদের গর্ব রূপকথা
রূপকথার ব্যবসায়ী বাবা ওয়াসিম ফারহান ও মা সিনথিয়া ফারহিনের স্বপ্ন, তাদের সন্তান রূপকথা ভবিষ্যতে কম্পিউটার ওয়ার্ল্ডে নতুন যুগের সূচনা করবে। আমাদেরও প্রত্যাশা, বাংলাদেশের ‘রূপকথা’ তার অদম্য প্রতিভা দিয়ে জয় করবে বিশ্ব, যার যাত্রা এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। সাইবার ওয়ার্ল্ডে তার জ্ঞানের বিচ্ছুরণ নবদিগন্তের সূচনা করবে, যা হবে বাংলাদেশের জন্য অনেক অনেক গর্বের একটা বিষয়।
কিন্তু কম্পিউটারের কী জানে রূপকথা—স্বভাবতই এ প্রশ্ন জাগে সবার মনে। ছয় বছরের এই বয়সে অধিকাংশ শিশু যখন খেলনাপত্র নিয়ে খেলাধুলা করে তখন রূপকথা তার নিজস্ব কম্পিউটার সিস্টেম (উইন্ডোসসহ) তৈরি করে এবং একজন বিশেষজ্ঞের মতো কম্পিউটার প্রোগ্রামিং করে। জন্মগতভাবে মেধাবী রূপকথার বাসা রাজধানী ঢাকার গুলশানে। অবিশ্বাস্যভাবে মাত্র সাত মাস বয়স থেকেই সে কম্পিউটার নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করে এবং দুই বছর বয়সে কম্পিউটারে লেখালেখি করা শিখে ফেলে। তার গর্বিত মা সিনথিয়া ফারহিন রিসা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এই বিস্ময়বালক প্রতিদিন ১২ ঘণ্টারও বেশি কম্পিউটারের পেছনে ব্যয় করে এবং গেমের কারেক্টর কীভাবে পরিবর্তিত হয় তা জানার চেষ্টা করে।
শুধু তাই নয়, এই বয়সেই সে শিখে ফেলেছে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, প্রজেক্ট টুল তৈরি, সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের মতো অনেক জটিল কাজ। বর্তমানে দিনের ১২ ঘণ্টাই কাটে তার কম্পিউটারের সঙ্গে। ৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই ‘ওয়ার্ল্ড নিউজ এজেন্সি’ রূপকথাকে বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী প্রোগ্রামার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
শুরুর দিককার কথা
রূপকথার জন্ম ২০০৬ সালের ২৭ জানুয়ারি ঢাকার গুলশানে। জন্মের পর ওর বয়স যখন মাত্র কয়েক দিন, তখন সে পিসির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত। মাত্র ৭ মাস বয়স থেকেই রূপকথা তার বাবার পিসিতে মাউস নিয়ে কম্পিউটার গেমস খেলা শুরু করে। তার বয়স যখন ১ বছর, তখন তাকে কিছু খাওয়াতে চাইলে কম্পিউটারের সামনে বসিয়ে খাওয়ানো হতো। প্রথমে পিসি অন করতে হতো, এরপর সে তার সামনে বসে খাওয়া শুরু করত। মাত্র দুই বছরের মাথায় সে এমএস ওয়ার্ডে টাইপিং শুরু করে। তাকে খাবার খাওয়ানো হতো পিসির সামনে বসিয়ে বিভিন্ন অ্যানিমেশন ছবি দেখিয়ে। ওইটুকু বয়সী শিশুর এই আবদার মেটাতে তার মা সিনথিয়া ফারহিন রিসাকে সবকিছুই করতে হতো।
আরও বিস্ময়কর দক্ষতা অর্জন করেছে
রূপকথা তার হাতের ছোট আঙুল দিয়ে না দেখে এত স্পিডে টাইপ করতে পারে যে বিশ্বাস করাই কঠিন। টাইপিং তার কাছে খুব সাধারণ একটি বিষয়। এরই মধ্যে উইন্ডোজ এক্সপি, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, পাওয়ার পয়েন্ট, এডোবি ফটোশপ, ফ্লাশ প্রভৃতিতে বেশ পারদর্শিতা হয়ে গেছে। এমএস ওয়ার্ডের ফাইল তৈরি, টেক্সট ডিজাইন, পিকচার অ্যাড, গ্রাফ ও টেবিল ওয়ার্ক, এক্সেল দিয়ে বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ, পাওয়ার পয়েন্ট দিয়ে পিকচার মুভিং অ্যানিমেশন, স্লাইড শো, সাউন্ড ও মিউজিক অ্যাডের কাজ তার কাছে কয়েক মিনিটের ব্যাপার মাত্র। ফটোশপে যে কোনো ছবি এডিট করতে পারে স্বাচ্ছন্দ্যে। তথ্য পরিবর্তন করে একটি গেমসের চরিত্রকে আরেকটি গেমসে ঢুকিয়ে দিতে পারে অবলীলায়। ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন গেমিং সফটওয়্যার সে নিজে ডাউনলোড করে নিজেই ইনস্টল করে। একইভাবে সিডি থেকে বিভিন্ন সফটওয়্যার ও গেমস সে নিজে নিজেই পিসিতে ইনস্টল করে।
হার্ডওয়্যার বিষয়েও তার ভালো জ্ঞান আছে। প্রিন্স অব পার্সিয়া, টার্মিনেটর থ্রি, এজ অব মিথলজি, এজ অব এম্পায়ারসহ ৭শ’র অধিক জটিল কম্পিউটার গেমস সে এরই মধ্যে খেলেছে। ফেসবুক ও মাইস্পেসসহ ইন্টারনেটের বেশ কয়েকটি সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটেও তার অবাধ বিচরণ। ওয়াসিক ফারহান রূপকথা নামে সার্চ করলেই তাকে পাওয়া যাবে। এর বাইরে প্রায় পাঁচ হাজার নির্ভুল ইংরেজি শব্দ জানা আছে তার। রূপকথার মা সিনথিয়া ফারহিন রিসা জানালেন, খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেই সে বসে পড়বে কম্পিউটারে। এখন সে দিনের ১২ ঘণ্টা সময় কাটায় কম্পিউটারের সঙ্গে। তার মা অবাক করে দিয়ে জানালেন, এত কিছুর জন্য তার কোনো স্কুল কিংবা প্রশিক্ষক ছিল না কোনোদিন, এখনও নেই। যা শিখেছে সব রূপকথা নিজে নিজেই শিখেছে।
শুধু কি তাই...?
কম্পিউটার নিয়ে এখানেই রূপকথার শেষ নয়। ফোল্ডার ম্যানেজমেন্টেও তার রয়েছে অসম্ভব দক্ষতা। পিসির ড্রাইভ নেম ও ডেস্কটপের আইকন পরিবর্তন করে দেবে সেকেন্ডেই। এই বয়সে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে সে যতটুকু পারদর্শিতা অর্জন করেছে, বলা যায় অনেক দক্ষ প্রোগ্রামারও তা পারেনি। প্রোগ্রামিংয়ে সে অসাধারণ দক্ষতা অর্জন করেছে। সে সি, সি++, ভিজ্যুয়াল বেসিক, জাভা, পাইথন প্রভৃতিতে দক্ষতা অর্জন করার পাশাপাশি আলাদা আলাদা কোড দিয়ে নানা প্রোগ্রাম রান করাতে পারে। এমন অনেক কিছুই সে শিখেছে যা কোনো কম্পিউটার প্রোগ্রামারও বুঝতে পারছে না যে আসলে রূপকথা পিসিতে বসে কী করে! ।
খেলনা নিয়ে যখন অন্য শিশুদের সময় কাটছে, রূপকথা তখন বিরামহীনভাবে কম্পিউটারের সঙ্গে কথা বলছে। মাঝে মাঝে তার কম্পিউটারকে রি-ফরমেট করতে হয়। সেটআপ সে নিজেই দেয়। উইন্ডোজ সেটআপ নয়, ভিসতা ও ওরাকল সেটআপও সে করতে পারে। সতর্কতা হিসেবে প্রতিদিন সে ভাইরাস স্ক্যানও করে। অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের ডেট এক্সপায়ার করলে নিজেই ইন্টারনেট থেকে আপডেটেড ভার্সনটি ডাউনলোড করে নেয়। পাশাপাশি শিখে ফেলেছে ফটোশপ ও ফ্লাশ ফাইভের নানা ডিজিটাল কারুশিল্প। মোট কথা, কম্পিউটারের এমন কিছু নেই যা তার কাছে অজানা।
রূপকথার কাজের ভিডিও লিঙ্ক
অসম্ভব প্রতিভাধর রূপকথাকে পাওয়া যাবে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউবে। সার্চ করতে হবে incredible cyber baby roopkotha অথবা amazing cyber baby roopkotha টাইপ করে। রূপকথার কাজ নিয়ে ইউটিউবসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটে রয়েছে বেশকিছু ভিডিও ক্লিপিংসের লিঙ্কস্। এগুলোর কোনোটিতে দেখা যাচ্ছে সে অনেক দ্রুত টাইপ করছে। আবার কোনোটিতে প্রোগ্রামিং বা গেমস নিয়ে কাজ করছে। এমন ভিডিও লিঙ্কসের ঠিকানা হলো—
http://www.youtube.com/user/MegaFarheen
আমাদের গর্ব রূপকথা
রূপকথার ব্যবসায়ী বাবা ওয়াসিম ফারহান ও মা সিনথিয়া ফারহিনের স্বপ্ন, তাদের সন্তান রূপকথা ভবিষ্যতে কম্পিউটার ওয়ার্ল্ডে নতুন যুগের সূচনা করবে। আমাদেরও প্রত্যাশা, বাংলাদেশের ‘রূপকথা’ তার অদম্য প্রতিভা দিয়ে জয় করবে বিশ্ব, যার যাত্রা এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। সাইবার ওয়ার্ল্ডে তার জ্ঞানের বিচ্ছুরণ নবদিগন্তের সূচনা করবে, যা হবে বাংলাদেশের জন্য অনেক অনেক গর্বের একটা বিষয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন